ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি : ৭ বছরে শেষ হয়নি যাদুকাটা নদীতে সেতু নির্মাণের কাজ

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি : ৭ বছরে শেষ হয়নি যাদুকাটা নদীতে সেতু নির্মাণের কাজ

তাহিরপুর(সুনামগঞ্জ)প্রতিনিধি
গত ৭ বছর পূর্বে পর্যটন স্পষ্ট,তিনটি শুল্কবন্দরসহ চারটি উপজেলার যোগাযোগ ও ব্যবসা বানিজ্যের প্রসারের লক্ষ্যে যাদুকাটা নদীর ওপর শাহ আরেফিন (র) ও অদ্বৈত মহাপ্রভু মৈত্রী সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ৩০ মাসের মধ্যেই এর নির্মান কাজের নির্দেশনা ছিল। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি ও ঢিলেমির কারনে সেতুর কাজ শেষ না করায় সর্বসাধারণের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করেছে।

জানা গেছে,গত ৭ বছরের মধ্যে এই একটি সেতু নির্মাণের সময় বাড়ানো হয়েছে চারবার। এতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লাভ হলেও স্থানীয় বাসিন্দারা কর্মসংস্থানের সুযোগ কাজে লাগিয়ে জীবন জীবিকার পরিবর্তন করতে পারছেন না তেমনি চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে সর্বস্তরের মানুষ।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের গড়কাটি ও বিন্নাকুলী গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত যাদুকাটা নদীর উপর নির্মাণাধীন ৭৫০মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি জেলার সবেচেয় দীর্ঘতম সেতু।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,ভারতের মেঘালয় পাহাড় আর অপরূপ সৌন্দর্যের যাদুকাটা নদী ঘিরে জমে উঠেছে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন পর্যটন শিল্প। সেই শিল্পকে চাঙ্গা করতে সেতু নির্মাণ শুরু হয়। সীমান্ত এলাকা হয়ে সুনামগঞ্জ-নেত্রকোনা-ঢাকার সড়ক যোগাযোগ সহজ হবে। এছাড়াও এই সেতুকে ঘিরে জেলার তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর,মধ্যনগর ও ধর্মপাশা উপজেলার লাখ লাখ মানুষ যোগাযোগ ব্যবস্থার মাইল ফলক সৃষ্টি হত। এখন ঐসব উপজেলার মানুষের স্বপ্নপূরণের দ্বারপ্রান্তে এসেও আলোর মুখ দেখতে পারছেন না সেতুটির পূর্ব পাড়ের অংশে কাজ না করায়।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি)পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় তমা কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রায় ৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে এই কাজটি শুরু করে ৪ ডিসেম্বর ২০১৮ সালে। ৭৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটিতে এ পর্যন্ত ৭৫টি গার্ডারের মধ্যে মাত্র ৫৭টি এবং ১৫টি স্লাবের মধ্যে ১০টির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। ১৮টি গার্ডার ও ৫টি স্লাবের কাজ এখনও বাকি রয়ে গেছে ৭ বছর পরেও।

স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর মিয়া জানান, যাদুকাটা নদী পারি দিতে প্রায় ৩০ মিনিট লাগে। আর বর্ষার সময় আরও বেশি সময় লাগে আর টাকাও খরচ হয়। অনেক সময় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটছে। সেতুটি সম্পন্ন হলে এই দুর্ভোগ পোহাতে হত না।

সেতু নির্মাণ কাজ দেরী হওয়ার কারন হিসাবে বার বার বন্যা,প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণ কে দায়ী করে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশনের প্রকল্প ম্যানেজার মোহাম্মদ নাসির জানিয়েছেন,চলতি বছর জুনের মধ্যেই শেষ হবে কাজ।

বাদাঘাট বাজারের ব্যবসায়ী কবির ভূইয়াসহ অনেকেই জানান,উপজেলার বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ীগন ঢাকা থেকে মালামাল কিনে সরাসরি বাজার গুলোতে নিয়ে আসতে পারছে না সেতু না হওয়ার কারনে। এখন মালামাল পরিবহনে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছি।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হাসেম জানান,সেতুটি নির্মাণ সম্পর্ন হলে জেলায় পর্যটন খাতের নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে,ব্যবসা বানিজ্যেও প্রসার হবে,একেই সাথে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের উপায় হবে।

প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও ঠিকাদারদের অবহেলায় নির্মাণ কাজ বিলম্ব হচ্ছে বলে জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জ এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। তিনি আরও জানিয়েছেন,দ্রুত কাজ শেষ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তাগিদ দিয়ে চিঠি দিয়েছেন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff